ঢাকা ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে হাঁসের খামারের সম্ভাবনার হাতছানি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ ২০২১
  • ১৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৫ বছর আগে একশ হাঁস নিয়ে খামার চালু করেছিলেন সুবু মিয়া। এখন তার খামারে হাঁসের সংখ্যা ১৫শ। তার খামারে কাজ করে সংসার চালান আর ৫ জন শ্রমিক। হাঁসের ডিম বিক্রি করে বছরে অনেক টাকা আয় হয়। লাভজনক হওয়ায় সুবু মিয়ার মতো হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন।

কিন্তু একটি সংকট এখনও রয়ে গেছে তার। সুবু মিয়া জানালেন, হাঁস ডিম দেয়া বন্ধ করলে আমরা আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। শ্রমিকদের মজুরি দিতে হিমশিম খেতে হয়। ওই সময় কেউ কোনো সহযোগিতা করে না।

সরজমিনে হাওর কাউয়াদীঘির মধ্যস্থলে গেলে চোঁখে পড়ে হাজার হাজার হাঁসের ঝাঁক। রাখাল যেমন গরুর পাল নিয়ে ছুটে চলে, তেমনি হাঁসের ঝাঁক নিয়ে ছুটে চলেন এর মালিক। দল বেঁধে এসব হাঁস হাওরের খাল-বিল-নদীর অল্প পানিতে মাছ বা জলজ প্রাণী কিংবা শেওলা খাচ্ছে। হাওরে মানুষ এসব হাঁস পোষেন এবং এই হাঁসের ডিম, বাচ্চা ও বড় হাঁস বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে ৪৩২টি হাঁসের খামার রয়েছে। খামারগুলোতে মোট হাঁসের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ ৭০টি।

স্থানীয় লোকজন জানান, ‘হাওরের হাঁসের ত্যাল (তেল) হয় জব্বর।’

এই হাঁসের স্বাদ অন্য হাঁস থেকে আলাদা বলেই এর বেশ কদর আছে স্থানীয় বাজারে। হাঁসের ডিমেরও অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। লাভজনক হওয়ায় হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন। পাইকারি ক্রেতারা হাওরের খোঁয়াড় থেকে ডিম সংগ্রহ করেন। সেই ডিম বাক্স ভর্তি হয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

হাওরপারের বাসিন্দা শামিম বলেন, আরো অনেক মানুষ হাওরে হাঁসের খামার দেখে খামার গড়ে তুলছে। গত কয়েক বছরে কাউয়াদিঘি হাওরেই অনেক হাঁসের খামার তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয় অনেক মানুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এভাবে আরও খামার তৈরি হলে অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, হাওরের খামারে উৎপাদিত ডিমের চাহিদা বাজারে অনেক। তাই দামও পাওয়া যায় বেশি। তবে ডিমের সংকট থাকে সব সময়। এই ডিম পেলে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। ক্রেতার চাহিদাও বেশি থাকে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে হাঁস পালন একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাওরে হাঁসের খামারের সম্ভাবনার হাতছানি

আপডেট টাইম : ০২:২০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ১৫ বছর আগে একশ হাঁস নিয়ে খামার চালু করেছিলেন সুবু মিয়া। এখন তার খামারে হাঁসের সংখ্যা ১৫শ। তার খামারে কাজ করে সংসার চালান আর ৫ জন শ্রমিক। হাঁসের ডিম বিক্রি করে বছরে অনেক টাকা আয় হয়। লাভজনক হওয়ায় সুবু মিয়ার মতো হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন।

কিন্তু একটি সংকট এখনও রয়ে গেছে তার। সুবু মিয়া জানালেন, হাঁস ডিম দেয়া বন্ধ করলে আমরা আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। শ্রমিকদের মজুরি দিতে হিমশিম খেতে হয়। ওই সময় কেউ কোনো সহযোগিতা করে না।

সরজমিনে হাওর কাউয়াদীঘির মধ্যস্থলে গেলে চোঁখে পড়ে হাজার হাজার হাঁসের ঝাঁক। রাখাল যেমন গরুর পাল নিয়ে ছুটে চলে, তেমনি হাঁসের ঝাঁক নিয়ে ছুটে চলেন এর মালিক। দল বেঁধে এসব হাঁস হাওরের খাল-বিল-নদীর অল্প পানিতে মাছ বা জলজ প্রাণী কিংবা শেওলা খাচ্ছে। হাওরে মানুষ এসব হাঁস পোষেন এবং এই হাঁসের ডিম, বাচ্চা ও বড় হাঁস বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে ৪৩২টি হাঁসের খামার রয়েছে। খামারগুলোতে মোট হাঁসের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ ৭০টি।

স্থানীয় লোকজন জানান, ‘হাওরের হাঁসের ত্যাল (তেল) হয় জব্বর।’

এই হাঁসের স্বাদ অন্য হাঁস থেকে আলাদা বলেই এর বেশ কদর আছে স্থানীয় বাজারে। হাঁসের ডিমেরও অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। লাভজনক হওয়ায় হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন। পাইকারি ক্রেতারা হাওরের খোঁয়াড় থেকে ডিম সংগ্রহ করেন। সেই ডিম বাক্স ভর্তি হয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

হাওরপারের বাসিন্দা শামিম বলেন, আরো অনেক মানুষ হাওরে হাঁসের খামার দেখে খামার গড়ে তুলছে। গত কয়েক বছরে কাউয়াদিঘি হাওরেই অনেক হাঁসের খামার তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয় অনেক মানুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এভাবে আরও খামার তৈরি হলে অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, হাওরের খামারে উৎপাদিত ডিমের চাহিদা বাজারে অনেক। তাই দামও পাওয়া যায় বেশি। তবে ডিমের সংকট থাকে সব সময়। এই ডিম পেলে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। ক্রেতার চাহিদাও বেশি থাকে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে হাঁস পালন একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।